হজ ইসলামি জীবন বিধানের পঞ্চম স্তম্ভের অন্যতম। হজের প্রতিটি কাজ ঐতিহাসিক
স্মৃতিবিজড়িত ও খুবই তাৎপর্যবহ। সর্বপ্রথম বাইতুল্লাহ শরিফের হজ আদায় করেন
হজরত আদম (আ.)। এরপর হজরত নুহ (আ.) থেকে শুরু করে সকল নবী-রাসুল কাবা
শরিফের জিয়ারত ও তাওয়াফ করেন। কাবা শরিফ পুনর্নির্মাণের কাজ সমাপ্তির পর
মহান রাব্বুল আলামিন জিবরাইল (আ.) এর মাধ্যমে হজরত ইব্রাহিম (আ.) কে এই
পবিত্র গৃহের তওয়াফ ও হজ করার নির্দেশ দেন। নির্দেশ পেয়ে হজরত ইব্রাহিম
(আ.) ও ঈসমাইল (আ.) উভয়েই তাওয়াফসহ হজের যাবতীয় আহকাম পালন করেন। এরপর
আল্লাহ রাব্বুল আলামিন হুকুম দিলেন, ‘হে ইব্রাহীম! তুমি পুরো পৃথিবীর
মানুষের মাঝে হজের ঘোষণা ছড়িয়ে দাও। এই বিষয়ে আল কুরআনে ইরশাদ হচ্ছে,
আল্লাহ তায়ালা হজরত ইব্রাহিম (আ.) কে নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, ‘মানুষের কাছে
হজের ঘোষণা করে দাও, তারা তোমার কাছে আসবে পায়ে হেটে। সব ধরণের ক্ষীণকায়
উঠের পিঠে। তারা আসবে বহুদূর-দূরান্তের পথ অতিক্রম করে। (সুরা হজ: ২৭)
হজের ফাজায়েল ও মাসায়েল
হজের গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কীয় অসংখ্য আয়াত ও হাদিস উল্লেখ রয়েছে। প্রিয়নবী (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যখন তুমি হাজিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে, তখন তুমি তাকে সালাম করবে, মুসাফাহা করবে এবং তার বাড়িতে প্রবেশের আগে তাকে তোমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করার অনুরোধ করবে। কেননা তিনি ক্ষমাপ্রাপ্ত।’ (আহমদ: ২৫৩৮) এমনিভাবে হুজুর (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কেবলমাত্র আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টির নিমিত্তে হজ করে এবং মাঝে কোন ধরণের অনর্থক কথা-বার্তা ও গুণাহের কাজে লিপ্ত না হয়,তখন সে এমনভাবে পবিত্র হয়ে প্রত্যাবর্তন করে যেমন কোন বাচ্চা তার মার গর্ভ থেকে পূর্ণ নিষ্পাপ ও পবিত্র হয়ে দুনিয়াতে এলো।(বোখারি: ১৪৪৯) হাজিগণ আল্লাহ তায়ালার সম্মানিত মেহমান। তাদের দোয়া আল্লাহ কবুল করেন। মহানবী (সা.) বলেন, ‘যখন তোমাদের সঙ্গে কোন সম্মানিত হাজির সাক্ষাত হয়, তখন তাকে নিজ ঘরে আনার পূর্বে তাকে সালাম দাও, মুসাফা করো এবং তার কাছে স্বীয় মাগফিরাতের জন্য দোয়া চাও। কেননা সে এখন এ অবস্থায় আছেন যে তার সব গুণাহ আল্লাহ ক্ষমা করে দিয়েছেন। ( মুসনাদে আহমদ: ২৫৩৬) হজের নেকী হল অসহায় লোকদের খানা খাওয়ানো আর অত্যন্ত নরম ভাষায় কথা বলা। রাসুল (সা.) বলেন, ‘হজে মাবরুর অর্থাৎ মাকবুল হজের প্রতিদান জান্নাতই। হুজুর সাল্ললাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করা হল, হজের নেকী কি? রাসূল (সা.) বললেন, অসহায়দের খানা খাওনো আর নরম ভাষায় কথা বলা। (মুসনাদে আহমাদ: ২৫৪২)
হজ তিন প্রকার। ১. তামাত্তু। ২. কিরান। ৩. ইফরাদ। এই তিন প্রকারের মধ্যে যেকোনো একটি করার অবকাশ আছে। তবে মিকাতের ভেতর অবস্থানকারীরা হজে ইফরাদ করবে। হজ্বে তামাত্তু: মিকাত থেকে কেবল উমরার ইহরাম বাঁধবে। উমরার তওয়াফ এবং সায়ী করবে। চুল মুন্ডিয়ে ইহরাম খুলে ফেলবে। জিলহজ মাসের ৭/৮ তারিখে হজ্বের জন্য ইহরাম বাঁধবে। জিলহজের ৮ তারিখে তালবিয়া পড়তে পড়তে মিনাতে গিয়ে ঐ আমল করবে, যা হজের ছয়দিনে করা হয়।
হজ্বে কিরান: মিকাত থেকে হজ এবং উমরা উভয়টা এক সঙ্গে ইহরাম বাঁধবে। উমরার তওয়াফ এবং সায়ী করবে। আর ইহরাম অবস্থায় থাকবে। ইহরামের নিষেধ কাজ থেকে বেঁচে থাকবে। ৮ই জিলহজ্বে তালবিয়া পড়তে মিনাতে গিয়ে সেই আমল করবে যা হজের ছয় দিনে উল্লেখ আছে। হজ্বে ইফরাদ: মিকাত শুধু হজের ইহরাম বাঁধবে। তওয়াফে কদুম করবে। ইহরাম অবস্থাই থাকবে। ইহরামের নিষেধ থেকে বেঁচে থাকবে। ৮ই জিলহজ্বে তালবিয়া পড়তে মিনাতে গিয়ে সেই আমল করবে যা হজ্বের ছয় দিনে উল্লেখ আছে।
হজ ফরজ হওয়ার শর্তসমূহ
মুসলমান হওয়া, ২. জ্ঞানসম্পন্ন হওয়া, ৩. বালেগ হওয়া, ৪. স্বাধীন হওয়া, ৫. হজের সময় হওয়া, ৬. মধ্যম ধরনের ব্যয় হিসেবে সফরের ব্যয় বহনের সামর্থ্য থাকা, যদিও হজ পালনকারী মক্কা শরিফে অবস্থান করে। ৭. যারা মক্কা শরিফের বাইরে থাকেন তাদের জন্য হজ পালনের শর্ত হলো মালিকানা বা ভাড়া সূত্রে স্বতন্ত্রভাবে একটি বাহন বা অন্য কিছু ব্যবহারের সামর্থ্য থাকা যেমন, আমাদের দেশের হাজিরা বিমান ব্যবহার করে থাকেন। ৮. অমুসলিম দেশে মুসলমান ব্যক্তির ‘হজ ইসলামের একটি রুকন’ এ কথা জানা থাকা।
হজ ওয়াজিব হওয়ার শর্তসমূহ
সুস্থ থাকা, ২. হজে যাওয়ার বাহ্যিক বাধা না থাকা, ৩. রাস্তা নিরাপদ হওয়া, ৪. মহিলারা নিজ ইদ্দত অবস্থায় না থাকা, ৫. নারীর সঙ্গে একজন মুসলমান আস্থাভাজন, জ্ঞানসম্পন্ন, বালেগ মাহরাম পুরুষ থাকা। হজের রুকন দুটি: ১. ইহরাম বাঁধা। ২. মুসলমান হওয়া।
হজের ফরজসমূহ
ইহরাম বাঁধা। ২. আরাফায় অবস্থান। ৩. তওয়াফে যিয়ারত। ৪. অনেক উলামায়ে কেরাম সায়ী করাও ফরজ বলেছেন।
সংকলনঃ জনাব মোঃ নাজিমুল হাসান খান
প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি
তরুণ উন্নয়ন সংঘ, বাংলাদেশ।
হজের ফাজায়েল ও মাসায়েল
হজের গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কীয় অসংখ্য আয়াত ও হাদিস উল্লেখ রয়েছে। প্রিয়নবী (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যখন তুমি হাজিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে, তখন তুমি তাকে সালাম করবে, মুসাফাহা করবে এবং তার বাড়িতে প্রবেশের আগে তাকে তোমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করার অনুরোধ করবে। কেননা তিনি ক্ষমাপ্রাপ্ত।’ (আহমদ: ২৫৩৮) এমনিভাবে হুজুর (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কেবলমাত্র আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টির নিমিত্তে হজ করে এবং মাঝে কোন ধরণের অনর্থক কথা-বার্তা ও গুণাহের কাজে লিপ্ত না হয়,তখন সে এমনভাবে পবিত্র হয়ে প্রত্যাবর্তন করে যেমন কোন বাচ্চা তার মার গর্ভ থেকে পূর্ণ নিষ্পাপ ও পবিত্র হয়ে দুনিয়াতে এলো।(বোখারি: ১৪৪৯) হাজিগণ আল্লাহ তায়ালার সম্মানিত মেহমান। তাদের দোয়া আল্লাহ কবুল করেন। মহানবী (সা.) বলেন, ‘যখন তোমাদের সঙ্গে কোন সম্মানিত হাজির সাক্ষাত হয়, তখন তাকে নিজ ঘরে আনার পূর্বে তাকে সালাম দাও, মুসাফা করো এবং তার কাছে স্বীয় মাগফিরাতের জন্য দোয়া চাও। কেননা সে এখন এ অবস্থায় আছেন যে তার সব গুণাহ আল্লাহ ক্ষমা করে দিয়েছেন। ( মুসনাদে আহমদ: ২৫৩৬) হজের নেকী হল অসহায় লোকদের খানা খাওয়ানো আর অত্যন্ত নরম ভাষায় কথা বলা। রাসুল (সা.) বলেন, ‘হজে মাবরুর অর্থাৎ মাকবুল হজের প্রতিদান জান্নাতই। হুজুর সাল্ললাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করা হল, হজের নেকী কি? রাসূল (সা.) বললেন, অসহায়দের খানা খাওনো আর নরম ভাষায় কথা বলা। (মুসনাদে আহমাদ: ২৫৪২)
হজ তিন প্রকার। ১. তামাত্তু। ২. কিরান। ৩. ইফরাদ। এই তিন প্রকারের মধ্যে যেকোনো একটি করার অবকাশ আছে। তবে মিকাতের ভেতর অবস্থানকারীরা হজে ইফরাদ করবে। হজ্বে তামাত্তু: মিকাত থেকে কেবল উমরার ইহরাম বাঁধবে। উমরার তওয়াফ এবং সায়ী করবে। চুল মুন্ডিয়ে ইহরাম খুলে ফেলবে। জিলহজ মাসের ৭/৮ তারিখে হজ্বের জন্য ইহরাম বাঁধবে। জিলহজের ৮ তারিখে তালবিয়া পড়তে পড়তে মিনাতে গিয়ে ঐ আমল করবে, যা হজের ছয়দিনে করা হয়।
হজ্বে কিরান: মিকাত থেকে হজ এবং উমরা উভয়টা এক সঙ্গে ইহরাম বাঁধবে। উমরার তওয়াফ এবং সায়ী করবে। আর ইহরাম অবস্থায় থাকবে। ইহরামের নিষেধ কাজ থেকে বেঁচে থাকবে। ৮ই জিলহজ্বে তালবিয়া পড়তে মিনাতে গিয়ে সেই আমল করবে যা হজের ছয় দিনে উল্লেখ আছে। হজ্বে ইফরাদ: মিকাত শুধু হজের ইহরাম বাঁধবে। তওয়াফে কদুম করবে। ইহরাম অবস্থাই থাকবে। ইহরামের নিষেধ থেকে বেঁচে থাকবে। ৮ই জিলহজ্বে তালবিয়া পড়তে মিনাতে গিয়ে সেই আমল করবে যা হজ্বের ছয় দিনে উল্লেখ আছে।
হজ ফরজ হওয়ার শর্তসমূহ
মুসলমান হওয়া, ২. জ্ঞানসম্পন্ন হওয়া, ৩. বালেগ হওয়া, ৪. স্বাধীন হওয়া, ৫. হজের সময় হওয়া, ৬. মধ্যম ধরনের ব্যয় হিসেবে সফরের ব্যয় বহনের সামর্থ্য থাকা, যদিও হজ পালনকারী মক্কা শরিফে অবস্থান করে। ৭. যারা মক্কা শরিফের বাইরে থাকেন তাদের জন্য হজ পালনের শর্ত হলো মালিকানা বা ভাড়া সূত্রে স্বতন্ত্রভাবে একটি বাহন বা অন্য কিছু ব্যবহারের সামর্থ্য থাকা যেমন, আমাদের দেশের হাজিরা বিমান ব্যবহার করে থাকেন। ৮. অমুসলিম দেশে মুসলমান ব্যক্তির ‘হজ ইসলামের একটি রুকন’ এ কথা জানা থাকা।
হজ ওয়াজিব হওয়ার শর্তসমূহ
সুস্থ থাকা, ২. হজে যাওয়ার বাহ্যিক বাধা না থাকা, ৩. রাস্তা নিরাপদ হওয়া, ৪. মহিলারা নিজ ইদ্দত অবস্থায় না থাকা, ৫. নারীর সঙ্গে একজন মুসলমান আস্থাভাজন, জ্ঞানসম্পন্ন, বালেগ মাহরাম পুরুষ থাকা। হজের রুকন দুটি: ১. ইহরাম বাঁধা। ২. মুসলমান হওয়া।
হজের ফরজসমূহ
ইহরাম বাঁধা। ২. আরাফায় অবস্থান। ৩. তওয়াফে যিয়ারত। ৪. অনেক উলামায়ে কেরাম সায়ী করাও ফরজ বলেছেন।
সংকলনঃ জনাব মোঃ নাজিমুল হাসান খান
প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি
তরুণ উন্নয়ন সংঘ, বাংলাদেশ।
No comments:
Post a Comment