কসবা মুঘল মসজিদ নির্মাণে ব্যাবহার করা হয় এই ব্লক
শেরপুর
পরগণার প্রশাসনিক কেন্দ্র বিন্দু ছিল কসবা।
কসবা একটি ফরাসি শব্দ । কসবা শব্দটির আভিধানিক অর্থ জনপদ অথবা উপশহর।
ভারতবর্ষে সেইসময় মুসলিম শাসনামলে বিভিন্ন জনপদের এ নামকরণ করা হয়। কসবা
গ্রামটি আয়তনে বেশ বড় এবং ছোট ছোট এলাকায় বা পাড়ায় বিভক্ত ও পৃথক পৃথক নাম
ছিল ।
উক্ত সময়ে মোঘলরা তাঁদের বসত বাড়ীর পাশে একটি মসজিদ নির্মান করেন। এটিই কসবা মুঘল মসজিদ নামে পরিচিত ছিল। মসজিদটি কালক্রমে বিলীন হয়ে যায়। বর্তমানে এই মসজিদকে ঘিরে যে ঘনবসতিপূর্ণ ছোট পাড়াটি গড়ে উঠেছে তাকে মুঘল পাড়া বলা হয়। এলাকাবাসী উক্ত স্থানে শাহী মসজিদ নামে নতুন একটি মসজিদ নির্মাণ করেছেন ।
কসবা মুঘল মসজিদ এর স্থানে শাহী মসজিদ নামে নতুন একটি মসজিদ নির্মাণ
এখানে মোগল মসজিদ ছাড়াও মোগলদের শাসন কার্যের বেশকিছু নিদর্শন রয়েছে যেমনঃ
কাঠগড়, কাচারীপাড়া, কাজীগলি ও কাজীগলি মসজিদ, মুঘল বাড়ীর চারদিকে জঙ্গলি
পরিখা, কাঠগড় বা কাঠের কেল্লা ইত্যাদি । বর্তমানে জঙ্গলি পরিখা ছাড়া মুঘল
বাড়ীর চারদিকের কোন চিহ্ন নেই । স্থানীয়রা জানায় বাড়ির ভেতরের পুকুরটি
এখনও আছে যা তালা পুকুর নামে পরিচিত এবং মুঘল মসজিদটি ১৮৯৭ সালে এক ভয়াবহ ভূমিকম্পে দেবে
যায়। বসতবাড়ি স্থাপনের জন্য মুঘল বাড়ীর চিহ্নগুলোও হারিয়ে গিয়েছে ।
প্রত্নতত্ত বিভাগ বা সথানীয় প্রশাসন কেওই মোগলদের এই স্থানটি সংরক্ষণের কোন
পদক্ষেপ নেইনি।
মুঘল বাড়ীর চারদিকে জঙ্গলি পরিখা
কসবাতে মোগলরা কাচারী স্থাপন করেছিলেন । কাচারীর সকল কাজ বর্তমান কসবা
কাচারী পাড়ায় হত । কাচারী পাড়ায় কাচারীর কোন স্বৃতিচিহ্ন অবশিষ্ঠ নেই। তবে তার পাশে কাজীগলি নামে একটি পাড়া আছে তাতে পুরনো একটি ভঙ্গুর মসজিদ চোখে পড়বে। ধারণা করা হয় কাজীর বাড়ী কাচারী বা বিচারালয় এর আশেপাশে কোথাও ছিল। যা খুব সম্ভব কাঠের স্থাপনা হতে পারে। কাচারীর পুরনো ভঙ্গুর মসজিদের ব্লকের ইটের সাথে মুঘল মসজিদের ইটের হূবূহূ মিল আছে।
এলাকাবাসীর দাবী কাচারীর প্রধান কাজীর কবরটি কাজীগলিতে বর্তমান কাজীগলি মসজিদের পূর্ব উত্তরে আছে।
কাজীর কবর
কাজীর কবরের ব্লকের ইটের সাথে কাজীর মসজিদের ইটের এবং মোগল মসজিদের ইটের হূবূহূ মিল পাওয়া যায়।
কাজীর কবরের ব্লকের ইট
শাহ কামাল (র.) এর মাজার
গারো পাড়াঃ
কসবা গ্রামের পশ্চিম প্রান্তে ছোট নয়নাভিরাম সবুজ পাড়ার নাম গারো পাড়া। এখানে প্রায় ৩০-৪০ টি বাড়ি নিয়ে এ পাড়াটিতে প্রায় ২৫০-৩০০ লোকের বসবাস। এ পাড়ায় বর্তমানে শিশুদের শিক্ষার হার প্রায় ৯৫ ভাগ। বেশিরভাগ লোকজন কৃষিকাজ, দিনমজুর ও কিছু সংখ্যক লোক ব্যাবসা করে জীবিকা নির্বাহ করে।
কিভাবে যাওয়া যায়ঃ
মোগল মসজিদের স্থান ও পরিখা দেখতে চাইলে শেরপুর পৌর শহর থেকে পশ্চিম দিকে জেলা পরিষদ এবং খান বাড়ীর সামনে দিয়ে কসবা কাঠগড় এলাকায় যেতে হবে অথবা বাইরবাদ মসজিদের দক্ষিণ পাশের বাইপাস রাস্তা দিয়েও যাওয়া যায়। শহর থেকে ৫-১০ টাকা অটো রিকশা ভাড়া। শাহ কামাল (র.) এর মাজার
মোগল মসজিদের স্থান ও পরিখা দেখতে চাইলে শেরপুর পৌর শহর থেকে পশ্চিম দিকে জেলা পরিষদ এবং খান বাড়ীর সামনে দিয়ে কসবা কাঠগড় এলাকায় যেতে হবে অথবা বাইরবাদ মসজিদের দক্ষিণ পাশের বাইপাস রাস্তা দিয়েও যাওয়া যায়। শহর থেকে ৫-১০ টাকা অটো রিকশা ভাড়া। শাহ কামাল (র.) এর মাজার
দেখতে চাইলে শেরপুর পৌর শহর থেকে পশ্চিম দিকে লোকাল বাস স্ট্যান্ড এর পশ্চিমে ৫ টাকা অটো রিকশা ভাড়া। কাজীর মসজিদ এবং কবর তার ৫০০-৭০০ মিটারের আশেপাশে।
গবেষণা, অনুসন্ধান ও সংকলনঃ
জনাব মোঃ নাজিমুল হাসান খান
প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি
তরুণ উন্নয়ন সংঘ, বাংলাদেশ।
প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি
তরুণ উন্নয়ন সংঘ, বাংলাদেশ।
torunsongo@gmail.com
No comments:
Post a Comment