প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মধ্যে
হারিয়ে যেতে কিংবা
বুনো পাহাড়, ঘন অরন্য, পাহাড়ি ঝরনা,
যান্ত্রিক কোলাহল মুক্ত
মায়াঘেরা অঞ্চলে নিজের
একাকীত্বকে বিলীন করতে
চাইলে লাউচাপড়া হতে পারে আপনার সেরা
পছন্দ । আর যদি সঙ্গে থাকে
প্রিয়জন কিংবা পরিবার
তবে প্রকৃতির অকৃত্রিম
ভালোবাসায় শিহরিত হওয়ার
মত একটি দিন কাটাতে পারেন লাউচাপড়া
অবকাশ কেন্দ্রে । ছোট বড় পাহাড়ের
সাথে সবুজ অরণ্যের
মোহনীয় রুপ আপনাকে
মোহিত করবে । আর আবাহাওয়া ভালো
থাকলে চোখ বুলিয়ে
নিতে পারবেন সীমান্তের ওপারের
মেঘালয় কিংবা সুবিশাল
হিমালয়ের বুকে।
অবকাশ কেন্দ্রের প্রায়
দেড়শ ফুট উচু টিলার উপরে নির্মিত
প্রায় ৬০ ফুট উঁচু টাওয়ারে উঠলেই
এক লাফে চোখের
সামনে চলে আসবে
দিগন্ত বিস্তৃত সারি
সারি সবুজ পাহাড়-টিলা। চোখে পড়বে
সীমান্তের ওপারের মেঘালয়
রাজ্যের সুবিস্তৃত পাহাড়
এবং ভারতের তুরা
জেলার পাহাড়ী ছোট্ট
থানা শহর মহেন্দ্রগঞ্জ।
পাহাড়েরর ফাঁকে ফাঁকে
ছোট বড় বেশ কয়েকটি পাহাড়ি ঝর্না
রয়েছে । অবকাশ
কেন্দ্রে ঢুকার মুখেই
রয়েছে স্বচ্ছ লেক । শীতের মৌসুমে
পর্যটকের ঢল নামে
এই অবকাশ কেন্দ্রে
। মুখরিত হয়ে যায় পুরো অঞ্চল
। এখানে কোন হিংস্র প্রাণী নেই তবে বিভিন্ন সময় বিশেষ করে ধানের
মৌসুমে সীমান্তের ওপার
থেকে নেমে আসে বুনো হাতির দল ।
প্রকৃতি প্রেমিরা যেতে পারেন জামালপুরের লাউচাপড়া।
ওয়াচ টাওয়ারের উপরে উঠে যত দূরে চোখ যায় শুধুই সবুজের বিস্তীর্ণ বিস্তার।
থাকার জায়গাগুলো আটসাঁট হলেও মিলবে প্রকৃতির
হিমেল ছোঁয়া। ছুটির দিনগুলো কেটে যাবে কাঠ ঠোকরা আর হলদে পাখির কলতানে।
বকশিগঞ্জ ছেড়ে যতোই সামনে এগুতে থাকবেন চারিদিকটা যেন ততোই সবুজ। কোথাও কোথাও চলতি পথে সবুজের খেলা দেখতে দেখতে এক সময়ে এসে পৌঁছুবেন এক পাহাড়ের পাদদেশে। চারিদিকে গারো পাহাড়ের সবুজ বন। পাহাড়ের গা বেয়ে আঁকা বাঁকা একটি সিঁড়ি উঠে গেছে একেবারে চূড়ায়। সেখানে আবার রয়েছে মস্তবড় এক ওয়াচটাওয়ার। দশ-বারোটি সিঁড়ি ভেঙ্গে উপরে উঠলে চারিদিকে
সবুজ ছাড়া কিছুই আর চোখে পড়েনা। দূরে দেখা যায় ভারতের মেঘালয় রাজ্যের আকাশ ছোঁয়া সব পাহাড়। চারিদিকটা কেমন যেন ছবির মতো মনে হয়। এই পাহাড়ি জঙ্গলে আছে নানা জাতের পশু পাখি। ধান পাকার মৌশুমে আবার মেঘালয় থেকে চলে আসে বুনো হাতির দল। কাঠ ঠোকরা, হলদে পাখি, কালিম পাখি আরো কত ধরণের পাখি চোখে পড়বে এখানে এলে। লাউচাপড়ার
এ পাহাড় বেড়িয়ে ক্লান্ত হলে নিচে নেমে একটু বসতে পারেন লেকের ধারে। সবুজ ঘাসের মাঝে কৃত্রিম এ লেকটি বেশ সুন্দর। লেকের পাশে কোন গাছের ছায়ায় বসে কাটাতে পারেন কিছুটা সময়। এ সময়টাতে গেলে বেড়িয়ে আনন্দ পাবেন। কেননা পিকনিক মৌসুমে এখানে থাকে পিকনিক পার্টির ভীড়। পুরো জায়গাটি অবসর বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলেছে জামালপুর জেলা পরিষদ। এ অবসর কেন্দ্রে প্রবেশে কোন টাকা লাগে না। তবে কোন বাহন নিয়ে গেলে তার জন্য পার্কিং ফি দিতে হবে। পাহাড়তো দেখা হলো, এবার দেখে আসতে পারেন এখানকার উপজাতিদের ছোট্ট একটি গ্রাম। গারো উপজাতিদের এ গ্রামের নাম দিকলাকোনা। এ গ্রামে বাইশ পরিবারে রয়েছে একশ জন গারো। তারা সবাই খৃষ্ট ধর্মাবলম্বী। গ্রামে প্রবেশের আগে কথা বলতে পারেন এ গ্রামের মাতুব্বর প্রীতি সন সারমার সাথে। ভীষণ সদালাপি এ লোকটির আতিথেয়তায় মুগ্ধ হবেন আপনি। প্রতিবছর
বড়দিন, ইংরেজী নববর্ষ, ইস্টার সানডে উপলক্ষে এ গ্রামে হয় নানান উৎসব। দিকলাকোনা
গ্রামের শুরুতেই রয়েছে‘দিকলাকোনা সালগিত্তাল হোস্টেল’। লাউচাপড়ায় রাত কাটানো হতে পারে আপনার জীবনের স্মরণীয় অভিজ্ঞতা। এখানকার শান্ত নিরিবিলি পরিবেশ রাতে যেন আরো শান্ত, আরো স্নিগ্ধ।
লাউচাপড়া যেভাবে যাবেন-
স্পটটি জামালপুর জেলায়
হলেও ঢাকা থেকে
শেরপুর হয়ে যাওয়া
অনেকটা সহজ। শেরপুর
হয়ে গেলে ঢাকা
থেকে লাউচাপড়া যেতে
বাসই সবচেয়ে ভালো
মাধ্যম । | ঢাকা
থেকে ডে-নাইট
বাসে চলে আসতে
পারেন শেরপুর। শেরপুর
থেকে বাস, সিএনজি,
অটো বা ভ্যানে
শ্রীবর্দী কর্ণজোড়া হয়ে যাওয়া যায় লাউচাপড়া। শেরপুর
থেকে লাউচাপড়ার দূরত্ব
৩২ কিলোমিটার।
আবার যদি ট্রেনে
আসতে চান তবে ঢাকা থেকে ট্রেনে
জামালপুর জেলা শহরে
এসে জামালপুর থেকে
বাস, সিএনজি বা অটোয় বকশীগঞ্জ হয়ে লাউচাপড়ায় যাওয়া যায়।
লাউচাপড়ায় প্রবেশের সময় আপনার চোখে পড়বে
রাস্তার দুপাশে গ্রামীন
জনপদ । ফসলের
মাঠ । মাটির
ঘরবাড়ি এবং হৃদয়
জুড়ানো প্রকৃতি ।
জামালপুর জেলা সদর থেকে ৩৮ কিলোমিটার উত্তরে
বকশীগঞ্জ উপজেলা। বকশীগঞ্জ
উপজেলা সদর থেকে
পাকা রাস্তায় ১২ কিলোমিটার উত্তরে প্রায়
১০ হাজার একর জায়গা জুড়ে বিশাল
পাহাড়ী অঞ্চল । এলাকাটি বকশীগঞ্জ উপজেলার
ধানুয়া কামালপুর ইউনিয়নে
অবস্থিত। পুরো পাহাড়
আর বনভূমি লাউচাপড়া আর ডুমুরতলা এই দুটি
মৌজায় বিভক্ত। এই দুটি মৌজায় অবস্থিত
গ্রামগুলোর নামও চমৎকার
লাউচাপড়া , দিঘলাকোনা , বালুঝুড়ি, সাতানীপাড়া , পলাশতলা , মেঘাদল , শুকনাথপাড়া , গারোপাড়া , বালিজোড়া, সোমনাথপাড়া , বাবলাকোনা ইত্যাদি ।বাঙালিদের সাথে
এসব গ্রামে বাস করে প্রায় ৭০০ গারো, কোচ, হাজং
আদিবাসী পরিবার। দেখে
আসতে পারেন তাদের
জীবযাত্রাও ।
স্পটটি জামালপুর জেলায়
হলেও ঢাকা থেকে
শেরপুর হয়ে যাওয়া
অনেকটা সহজ। শেরপুর
হয়ে গেলে ঢাকা
থেকে লাউচাপড়া যেতে
বাসই সবচেয়ে ভালো
মাধ্যম । | ঢাকা
থেকে ডে-নাইট
বাসে চলে আসতে
পারেন শেরপুর। শেরপুর
থেকে বাস, সিএনজি,
অটো বা ভ্যানে
শ্রীবর্দী কর্ণজোড়া হয়ে যাওয়া যায় লাউচাপড়া। শেরপুর
থেকে লাউচাপড়ার দূরত্ব
৩২ কিলোমিটার।
আবার যদি ট্রেনে
আসতে চান তবে ঢাকা থেকে ট্রেনে
জামালপুর জেলা শহরে
এসে জামালপুর থেকে
বাস, সিএনজি বা অটোয় বকশীগঞ্জ হয়ে লাউচাপড়ায় যাওয়া যায়।
লাউচাপড়ায় প্রবেশের সময় আপনার চোখে পড়বে
রাস্তার দুপাশে গ্রামীন
জনপদ । ফসলের
মাঠ । মাটির
ঘরবাড়ি এবং হৃদয়
জুড়ানো প্রকৃতি ।
লাউচাপড়ায় থাকার জায়গা-
পর্যটকদের জন্য জামালপুর
জেলা পরিষদ গারো
পাহাড়ের চূড়ায় নির্মাণ
করেছে পিকনিক স্পট
‘ক্ষণিকা’। এখানে
থাকতে গেলে আগে থেকে অনুমতি নিয়ে
আসতে হবে। যোগাযোগ
করতে হবে প্রধান
নির্বাহি কর্মকর্তা, জেলা
পরিষদ, ফোন- ০৯৮১-৬২৭১৬, ০৯৮১-৬৩৫১৪,
০৯৮১-৬৩২৪০।
লাউচাপড়া অবকাশ কেন্দ্রের পাশেই
বনফুল নামে বেসরকারি
একটি রিসোর্ট রয়েছে
।সেটি আরে সজ্জিত
ও সুযোগ সুবিধা
সম্বলিত । তাদের
সাথে যোগাযোগ করতে
পারেন নিচের ঠিকানায়-
রিভার এন্ড গ্রীন ট্যুরস, এম আর সেন্টার (৭ম তলা), বাড়ি-৪৯, সড়ক ১৭, বনানি বাজার, বনানি, ঢাকা । ফোন: ৮৮২৬৭৫৯, (০৭৮৯) ২২৪৫৯৩
রিভার এন্ড গ্রীন ট্যুরস, এম আর সেন্টার (৭ম তলা), বাড়ি-৪৯, সড়ক ১৭, বনানি বাজার, বনানি, ঢাকা । ফোন: ৮৮২৬৭৫৯, (০৭৮৯) ২২৪৫৯৩
নিরাপত্তা- বাংলাদেশের অন্যান্য
পর্যটন কেন্দ্রগুলোর মতই । লাউচাপড়ার একটু দুরেই
রয়েছে বিজিবি ক্যাম্প
। তবে সন্ধ্যার
পর বাইরে অবস্থান
না করাটাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে ।
Source-
Online.
সংকলনঃ জনাব মোঃ নাজিমুল হাসান খান
প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি
তরুণ উন্নয়ন সংঘ, বাংলাদেশ।
সংকলনঃ জনাব মোঃ নাজিমুল হাসান খান
প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি
তরুণ উন্নয়ন সংঘ, বাংলাদেশ।
No comments:
Post a Comment