অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি আমাদের এই বাংলাদেশ। এই দেশের চির সবুজ প্রকৃতি
সর্বদা আর্কষণ করে প্রকৃতিপ্রেমী মানুষদের। দেশের সর্বত্রই ছড়িয়ে-ছিটিয়ে
আছে পাহাড়-নদী, খাল-বিল ও সবুজ অরণ্যঘেরা প্রকৃতি। তেমনি একটি স্থান
শেরপুরের পানিহাটা-তাড়ানি পাহাড়।
পর্যটনের জন্য সম্ভাবনাময় এই স্থানটির অবস্থান শেরপুর জেলায়। শেরপুর জেলা
শহর থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার এবং জেলার নালিতাবাড়ি উপজেলা শহর থেকে প্রায়
১৯ কিলোমিটার দূরে সীমান্তবর্তী গারো পাহাড় এলাকার রামচন্দ্রকুড়া ইউনিয়নে
অবস্থিত পানিহাটা-তারানি পাহাড়। মূলত পানিহাটা গ্রামের একটি অংশে রয়েছে
তারানি গ্রামের পাহাড়। আর এ দুয়ে মিলেই পর্যটকদের কাছে এ অঞ্চলটির পরিচিতি
গড়ে উঠেছে পানিহাটা-তারানি পাহাড় নামে।
প্রকৃতিপ্রেমীদের প্রতিনিয়ত আকর্ষণ করে শেরপুরের সীমান্তবর্তী গারো পাহাড় এলাকার অপরূপা পানিহাটা-তারানি পাহাড়। মেঘ-পাহাড়ের লুকোচুরি দৃশ্য যে কোন প্রকৃতি প্রেমীর মনকে কাছে টানবে। আর তাই পানিহাটা-তারানি পাহাড়ি এলাকা হয়ে উঠতে পারে আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র। পানিহাটা নামের স্থানটির একটা অংশে রয়েছে তারানি গ্রামের পাহাড়। তাই দর্শণার্থীদের জন্য পানিহাটা-তারানি দুটো মিলেই গড়ে উঠতে পারে আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র । একঘেয়ে জীবন, ক্লান্ত পরিশ্রান্ত মনকে প্রফুল্ল করতে শহর ছেড়ে ঘুরে আসুন
শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার রামচন্দ্রকুড়া ইউপির পানিহাটা-তারানি পাহাড়
এলাকা।
এখানে দেখতে পাবেন উত্তরে ভারতের তুরা পাহাড়কে আবছা আবরণে ঢেকে আছে মেঘ-কুয়াশা। দূরের টিলাগুলো মেঘের সাথে লুকোচুরি খেলছে যেন। তুরার অববাহিকা থেকে সামনে সোজা এসে পশ্চিমে চলে গেছে পাহাড়ি নদী ভোগাই। নদীর একপাশে শত ফুট উঁচুতে দাঁড়িয়ে থাকা সবুজে জড়ানো পাহাড়। নদীর টলটলে পানির নিচে নুড়ি পাথরগুলো ঝিকিমিকি করছে। সামনের একশ গজ দূরে ভারত অংশে আঁকাবাঁকা রাস্তা দিয়ে পূর্ব থেকে পশ্চিমে মাঝেমধ্যেই হুসহাস করে ছুটে চলছে মালবাহী ট্রাকগুলো। চতুর্দিকে ছোট ছোট অসংখ্য পাহাড়ের সাড়ি।
কিভাবে যাওয়া যায়:
শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলা শহর থেকে প্রায় ১৯ কিলোমিটার এবং শেরপুর জেলা শহর থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে সীমান্তবর্তী গারো পাহাড় এলাকার রামচন্দ্রকুড়া ইউনিয়নে অবস্থিত এ স্থানটি। তবে ঢাকা থেকে শেরপুর জেলা শহরে না এসেই নকলা উপজেলা শহর থেকেই নালিতাবাড়ী যাওয়ার সহজ ও কম দূরত্বের রাস্তা রয়েছে। এরপর নালিতাবাড়ী শহরের গড়কান্দা চৌরাস্তা মোড় হয়ে সোজা উত্তরে প্রথমে নাকুগাঁও স্থলবন্দরের কাছাকাছি গিয়ে পূর্ব দিকটায় মোড় নিয়ে ভোগাই ব্রিজ পাড়ি দিতে হয়। এরপর সোজা পূর্ব দিকে প্রায় আড়াই থেকে তিন কিলোমিটার গেলে চায়না মোড়। এ মোড়ে এসে আবারও গতিপথ বদলে যেতে হয় উত্তরে। উত্তরের এ রাস্তা ধরে প্রায় এক কিলোমিটার গেলেই পানিহাটা-তারানির মূল পয়েন্ট। ব্যক্তিগত উদ্যোগে রিকশা, সিএনজি অটোরিশা বা ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলেও যাওয়া যায় নালিতাবাড়ী শহর থেকে মাত্র ৩৫-৪৫ মিনিটের ব্যবধানে এবং অল্প খরচের মধ্যেই। এতে মোটরসাইকেল ভাড়া আসা-যাওয়ায় প্রায় ১ শ ৫০ টাকা।
সংকলন- মোঃ নাজিমুল হাসান খান।
No comments:
Post a Comment