Wednesday, June 5, 2024

বৃক্ষরোপন অভিযান-২০২৪

১৯৬৮ সালের ২০ মে জাতিসংঘের অর্থনীতি ও সামাজিক পরিষদের কাছে একটি চিঠি পাঠায় সুইডেন সরকার। চিঠির বিষয়বস্তু ছিল প্রকৃতি ও পরিবেশ দূষণ সম্পর্কে তাদের গভীর উদ্বেগের কথা। সে বছরই জাতিসংঘের পক্ষ থেকে পরিবেশ রক্ষার বিষয়টি সাধারণ অধিবেশনের আলোচ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। পরের বছর জাতিসংঘের পক্ষ থেকে পরিবেশ রক্ষার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা এবং সমাধানের উপায় খুঁজতে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সম্মতিতে সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে ১৯৭২ সালের ৫ থেকে ১৬ জুন জাতিসংঘ মানব পরিবেশ সম্মেলন (United Nations Conference on the Human Environment) অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনটি ইতিহাসের প্রথম পরিবেশ-বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের স্বীকৃতি পায়। ১৯৭৪ সালে সম্মেলনের প্রথম দিন ৫ জুনকে জাতিসংঘ 'বিশ্ব পরিবেশ দিবস' হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ১৯৭৪ সাল থেকে প্রতিবছর দিবসটি বিশ্বব্যাপী পালিত হয়ে আসছে। প্রতি বছরই দিবসটি আলাদা আলাদা শহরে, আলাদা আলাদা প্রতিপাদ্য বিষয় নিয়ে পালিত হয়। বিশ্ব পরিবেশ দিবস (সংক্ষেপে WED) প্রতি বছর ৫ জুন বিশ্বব্যাপী রাজনৈতিক কর্মোদ্যোগ আর জনসচেতনতার মাধ্যমে পরিবেশ সচেতনতার লক্ষ্যে পালিত দিবস।

৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস, এবারের জাতীয় বৃক্ষমেলার প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘বৃক্ষ দিয়ে সাজাই দেশ, সমৃদ্ধ করি বাংলাদেশ’। এ বছর বর্ষা মৌসুমে সারাদেশে ৮ কোটি ৩৩ লক্ষ ২৭ হাজার চারা রোপণ করা হবে।

মানুষসহ পৃথিবীর প্রাণিকুল উদ্ভিদের তৈরি খাদ্য খেয়েই জীবন ধারণ করে শুধু খাদ্য নয়, বৃক্ষ আমাদের অক্সিজেন সরবরাহ করে ওষুধ, বস্ত্র বাসস্থান জোগায় সুশীতল ছায়া দেয় ঝড়-ঝঞ্ঝা জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষা করে শিল্পের কাঁচামাল জ্বালানি সরবরাহ করে শব্দদূষণ বায়ুদূষণ থেকে রক্ষা করে বন্যপ্রাণীর খাদ্য আশ্রয় জোগায় সময় মতো বৃষ্টিপাত ঘটাতে সহায়তা করে পরিবেশের ভারসাম্য জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ করে মাটি ক্ষয় নদীভাঙন রোধ করে উষ্ণায়ন জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব থেকে পৃথিবীকে রক্ষা করে ফুলের সৌন্দর্য মনকে প্রফুল্ল করে ফল মানুষের পুস্টি জোগায় বৃক্ষ আমাদের ছায়া দেয়

গাছ লাগাই - পরিচর্যা করি, বাসযোগ্য পৃথিবী গড়ি এই শ্লোগানকে সামনে রেখে আমরা তরুন উন্নয়ন সংঘের বৃক্ষরোপন কর্মসূচীর বৈচিত্র আনয়নের জন্য বনজ, ফলদ, ভেষজ, শোভাবর্ধনকারী দেশীয় বিলুপ্ত প্রায় উদ্ভিদ প্রজাতীর উপর সমভাবে গুরুত্ব দিয়ে থাকে

আমারা এই জীবনে প্রকৃতি থেকে কত অক্সিজেন গ্রহণ করেছি, তার বিল তো পরিশোধ করিনি প্রকৃতির কাছে এতকটু কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করিনি একটি বারও প্রকৃতিকে ধন্যবাদ জানাইনি এতেই বোঝা যায়, প্রকৃতিও বৃক্ষ মানব জীবনের জন্য কত উপকারী প্রকৃতি আল্লাহর দান, প্রাকৃতিক পরিবেশ সুরক্ষা আমাদের দায়িত্ব প্রিয় নবীজি (সা.) নিজ হাতে গাছ লাগিয়েছেন, সাহাবায়ে কেরামকে গাছ লাগাতে বাগান করতে উদ্বুদ্ধ করেছেন ব্যক্তিগত সামাজিক বনায়নও করেছেন রাসুলুল্লাহ (সা.) বৃক্ষরোপণকে সদকায়ে জারিয়ার অন্তর্ভুক্ত করেছেন তিনি বলেছেন, মানুষ, পাখি বা পশু যখন তাদের আহার্য গ্রহণ করে, তখন তা তার (রোপণকারী) পক্ষে একটি সদকা (দান) হিসেবে পরিগণিত হয় (বুখারি মুসলিম)

আমাদের বেশি করে বৃক্ষরোপণ বনায়ন করা উচিত গাছ লাগাতে হবে, গাছের পরিচর্যা করতে হবে এবং অকারণে বৃক্ষনিধন বন্ধ করতে হবে প্রয়োজনে একটি পরিপক্ব গাছ কাটার আগে তিনটি চারা গাছ লাগাতে হবে

আশুন আমরা সম্মিলিত ভাবে তরুন উন্নয়ন সংঘের বৃক্ষরোপন অভিযানকে বৃক্ষরোপন আন্দোলন হিসেবে গড়ে তুলি পৃথিবীকে বাসযোগ্য হিসেবে গড়ে তুলার লক্ষ্যে বনভূমি তথা সকল উদ্ভিদকে সংরক্ষণ করে জলবাযুর ক্ষতিকর প্রভাব থেকে প্রাণীজাতীকে বিপর্যয় থেকে রক্ষা করার চেষ্টা করি বৃক্ষ রোপন পরিচর্যার মাধ্যমে সবুজ বেষ্টনী গড়ে তুলি তরুন উন্নয়ন সংঘের বৃক্ষরোপন অভিযানকে আরও বেগবান করার লক্ষ্যে সকলের সার্বিক সহযোগীতা কামনা করছি

 

সংকলনঃ

মোঃ নাজিমুল হাসান খান

torunsongo@gmail.com 

 

No comments:

Post a Comment

আন্তর্জাতিক সাদাছড়ি নিরাপত্তা দিবস

আন্তর্জাতিক সাদাছড়ি নিরাপত্তা দিবস   মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে   একটি জাতীয় দিবস। ১৯৬৪ সাল থেকে প্রতি বছরের ১৫ ই অক্টোবর দিবসটি...